সমস্ত লেখাগুলি

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও আইন -
মধুসূদন মাহাত
Nov. 19, 2024 | আইন | views:4621 | likes:3 | share: 0 | comments:0

বাল্যবিবাহ কী:- পরিণত বয়সের আগেই বিবাহ করলে, তাকে বাল্যবিবাহ বলা হয়। ভারতে কোন মেয়ে আঠারো বছরের নিচে এবং ছেলে একুশ বছরের নিচে বিয়ে করলে তাকে বাল্যবিবাহ হিসেবে ধরা হয়। বর্তমানে উভয়ের একুশের নিচে হলেই বাল্যবিবাহ বলে গণ্য হবে।

বাল্যবিবাহের পরিসংখ্যান:- বিশ্বে বাল্যবিবাহের হার যেখানে 29 শতাংশ, সেখানে ভারতে 58 শতাংশ। ইউনিসেফ -এর সমীক্ষা অনুযায়ী 43 শতাংশের বিয়েই 18 বছরের আগে হয়েছে। প্রান্তিক ও সুবিধা বঞ্চিত সম্প্রদায়ের মধ্যে যেমন - তপশিলী জাতি, জনজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসরদের ক্ষেত্রে 70% মেয়েদের বিয়ে হয় নাবালিকা বয়সেই। বাল্যবিবাহ যে দেশগুলিতে সবচেয়ে বেশি  তার মধ্যে 6 নম্বরে আছে ভারত।

বাল্যবিবাহের কারণ:- বাল্যবিবাহের অন্যতম কারণ হল সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা,  ধর্মীয় বিধিনিষেধ এবং বিজ্ঞান সচেতনতার অভাব। বেশী বয়স পর্যন্ত মেয়েকে বাড়িতে রাখলে, মেয়ে কোন অযাচিত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে পারে বা অবিবাহিত বলেই তার উপর কোন আক্রমণ সংঘটিত হলে পারিবারিক বা সামাজিক সম্মাণ নষ্ট হতে পারে এই আশঙ্কায় মেয়েদের দ্রুত বিয়ে দেওয়ার মানসিকতা তৈরা হয়ে রয়েছে। আবার, বেশী বয়সে বিয়ে হলে, বিয়ের খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায়  দ্রুত বিয়ে অনেক পরিবার। এছাড়াও রয়েছে ধর্মীয় রীতি মেনে দ্রুত বিয়ে দেওয়ার বিধি। ধর্মীয় রীতি মেনে চলতে ইসলামিক দেশগুলো বোধ হয় এগিয়ে। ইউনিসেফের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বে যে 5 টা দেশে বাল্যবিবাহের হার সর্বোচ্চ তা হল - নাইজার (75%), চাদ (72%), মালি (71%), বাংলাদেশ (64%), গিনি (63%)। এবং এই পাঁচটা দেশের প্রত্যেকটি ইসলাম প্রধান রাষ্ট্র। সর্বোপরি, কম বয়সে বিয়ে দিলে, বিশেষ করে মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির এবং তার সন্তানদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির যে সম্ভাবনা রয়েছে তা সম্বন্ধে অজ্ঞতাই বাল্যবিবাহের প্রধান কারণ।

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আইন:- বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় ভারতে প্রথম বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আইন আনা হয় 1929 সালে - "Child Marriage Registry Act, 1929" বা  "বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন - 1929"। এই আইন অনুসারে পাত্র পাত্রীর বিয়ের বয়স যথাক্রমে 21 এবং 18 করা হয়েছিল । এর থেকে কম বয়সে বিয়ে দিলে, যারা এই বিয়ের উদ্যোক্তা অর্থাত্ বাবা -মা ছাড়াও বিয়েতে উপস্থিত আত্মীয় স্বজন ও পুরোহিতের, এমনকি যারা এই বিয়েতে কোনভাবে সাহায্য বা আর্থিক সাহায্য করে থাকে, তাদের শাস্তির বিধান রয়েছে। 1929 সালের এই আইনে শাস্তির বিধান ছিল জরিমানাসহ তিনমাসের কারাবাস। পরে 2006 সালের " The Prohibition of Child Marriage Act, 2006" তে এই শাস্তি বাড়িয়ে 2 বছর কারাবাস অথবা একলক্ষ টাকা জরিমানা অথবা উভয়ই হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এরপর এই আইন আরও সংশোধন করে মেয়ের বিয়ের বয়স ন্যুনতম 21 বছর করা হয় - "The Prohibition of Child Marriage (Amendment) Act, 2021 তে।

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কীভাবে করবেন:- বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে আমাদের ও সরকারের সচেতনার কাজ সব সময় জারী রাখতে হবে। তবে এর বিরুদ্ধে কাজ করা খুব ঝুঁকিপূর্ণ। মনে রাখতে হবে এটি খুব স্পর্শকাতর বিষয়। কাজেই সাবধানতা খুব প্রয়োজন। 

 একজন নাবালিকা নিজে অভিযোগ করলে ভালো কথা এবং তা অন্যের কাজ করার বা তাকে সহযোগিতা করার পক্ষে সুবিধাজনক। কিন্তু, কোন প্রতিবেশী বা বাইরের কেউ কখনোই থানাতে এবং বিডিও অফিসে বিশেষ করে নিজের এলাকার বিডিও বা থানাকে জানাবেন না, কারণ এদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের ঘনিষ্ঠতা খুব বেশি, ফলে আপনার নাম ও ঠিকানা ফাঁস করে দিতে পারে। যারফলে অভিযুক্ত পরিবারের আক্রমণের শিকার হতে পারেন। অভিজ্ঞতা থেকে জেনেছি - জেলার সমাজ কল্যাণ আধিকারিক, মহকুমা শাসক এবং বর্তমানে চাইল্ড লাইন তথ্য গোপণ রেখে কাজ করে, তাই এদের জানানো বেশি নিরাপদ। এছাড়া আপনি যুক্তিবাদী সমিতিকে জানালেও তারা এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন। যুক্তিবাদী সমিতির পুরুলিয়া জেলা শাখা কয়েক বছরে গোপণে ও প্রকাশ্যে দুশোরও বেশি বাল্যবিবাহ বন্ধ করে সমাজে কড়াবার্তা দিতে পেরেছে, ফলে অনেক পরিবারকে বাল্যবিবাহ দিতে গিয়ে  পিছিয়ে আসতে হচ্ছে। তবে বাল্যবিবাহের কোন অভিযোগ থাকলে বিয়ের কিছুদিন আগেই জানান, তাতে করে পরিবারগুলোর অর্থনৈতিক ক্ষতিটা এড়ানো যাবে এবং সফলতার হারটাও বেশি হবে।

 

পকসো আইন

শিশুদের প্রতি যাতে কোনও ধরণের যৌন অপরাধ না হয়, তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে যে আইন, তাকেই "পকসো" (POCSO) বলা হয়। পুরো নাম, "দ্য প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস অ্যাক্ট ২০১২"।  শুধু নিরাপত্তা দেওয়া নয়, কোনও শিশুর প্রতি কোনওপ্রকার যৌন অপরাধ ঘটলে কীভাবে বা কি পদ্ধতিতে তার বিচার হবে, কোন আদালতে তার বিচার হবে, কোন পদ্ধতিতে শিশুটির সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে, কোন পদ্ধতিতে তদন্ত হবে, শিশুটির চিকিৎসা কীভাবে হবে–ইত্যাদি বিধানের ব্যবস্থা রয়েছে এই আইনে।


পকসো আইনে ১৮ বছরের নিচে বাচ্চাদেরই শুধু শিশু বলে গণ্য করা হবে। এখন দেখা যাক এই আইনে কী কী শাস্তির বিধান আছে।

1. যৌন নির্যাতন বা ধর্ষণের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৭ থেকে ১০ বছরের জেল ও জরিমানা। সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও জরিমানা।

2. যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন সাজা ৩ থেকে ৫ বছরের কারাবাস। সর্বোচ্চ সাজা ৫ থেকে ৭ বছরের কারাবাস ও জরিমানা।

3. অশ্লীল কাজের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৫ বছর জেল ও জরিমানা। সর্বোচ্চ ৭ বছর জেল ও জরিমানা। এছাড়াও আইনে বলা হয়েছে

4. যৌন হয়রানির শিকার শিশুর জবানবন্দী নিতে হবে তার বাড়ি বা পছন্দমত স্থানে। এই মামলায় প্রাধান্য দিতে হবে মহিলা পুলিশ আধিকারিককে।

5. রাতে শিশুকে থানায় আনা যাবে না।

6. জবানবন্দির সময় পুলিশ ইউনিফর্ম পরে থাকা চলবে না।

7. শিশুর কথা শুনে জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করতে হবে। শিশুর কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ নেওয়া যাবে না।

8. প্রয়োজনে জবানবন্দির সময় শিশুটির জন্য দোভাষীর ব্যবস্থা রাখতে হবে।

9. শারীরিকভাবে অক্ষম শিশুর জবানবন্দি নেওয়ার সময় পরিবারের লোকের সাহায্য নিতে হবে।

10. মেডিক্যাল পরীক্ষার সময় শিশুর মা–বাবা কিংবা বিশ্বস্ত ব্যক্তির উপস্থিতি দরকার।

11. নির্যাতিতা মহিলা হলে, মেডিক্যাল পরীক্ষার সময় মহিলা চিকিৎসক থাকতে হবে।

12. বিচার চলাকালীন শিশুর বিশ্রামের ব্যবস্থা থাকবে হবে।

13. কোনও উত্তেজনামূলক প্রশ্ন শিশুকে করা যাবে না।

14. নির্যাতিতা শিশুর নাম বিচারের সময় গোপন রাখতে হবে।

15. বিশেষ আদালতের নির্দেশ ছাড়া এই খবর প্রকাশ করা যাবে না।

16. বিশেষ জুভেনাইল পুলিশ দল ২৪ ঘণ্টার ভিতরে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিকে পুরো ঘটনা জানাতে হবে। 

17. শিশুটির গুরুতর আঘাত বা ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ এর ব্যবস্থা করতে হবে।

18. অপরাধের ৩০ দিনের মধ্যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শিশুর কাছে যা প্রমাণ আছে, তা আদালতে নথিভুক্ত করতে হবে। সম্প্রতি এই আইনের বিশেষ সংশোধনী আনা হয়েছে। একটি সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পকসো আইনের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ধারা সংশোধন করা হচ্ছে। নৃশংসতায় দোষীর মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। পাশাপাশি, চাইল্ড পর্নোগ্রাফি রুখতেও পকসো আইনে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।


সাইবার অপরাধ বা সাইবার ক্রাইম-এর আওতায় কী কী পড়ে?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়রানি, ফেসবুক এখন সবার হাতের নাগালে। খুব কম খরচে ফেসবুক ব্যবহার করা যায় আমাদের দেশে এখন। প্রযুক্তির এই ছোঁয়ায় আমাদের দেশ বদলেছে অনেক। কিন্তু এই ফেসবুকের মাধ্যমে করা ক্রাইম এখন বেড়েই চলেছে। সহজলভ্য হয়ে পড়ায় ফেসবুকে সাইবার ক্রাইম এখন আমাদের দেশে অনেক বড় একটি সমস্যা। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই সাইবার ক্রাইম আমাদের দেশে। আমাদের অজান্তেই আমরা সাইবার ক্রাইমেরর শিকার হয়ে যাচ্ছি। অনেকেই মুখ বুঝে সহ্য করেই যাচ্ছেন, কিন্তু জানেন না যে কিভাবে কি করতে হবে। আজকে আমি আসলে আপনাদের সাথে কথা বলবো কখন আর কিভাবে বুঝবেন যে আপনি ফেসবুকে বা সামাজিক গণমাধ্যমে সাইবার ক্রাইমের শিকার হচ্ছেন বা কখন আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

১. সাইবার বুলিং-

কেউ যদি অনলাইনে আপনাকে অহেতুক জ্বালাতন করে এবং আপনার সম্মানহানি করার চেষ্টা করে অথবা অনলাইনে যেকোনো উপায়েই হোক কেউ যদি আপনাকে উত্যক্ত করে তাহলে তা সাইবার বুলিং হিসেবে স্বীকৃত। সেক্ষেত্রে তা যদি অনলাইনে হয় তাহলে আপনি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন।


২. আইডি হ্যাক-

আপনার ফেসবুক আইডি কেউ যদি হ্যাক করে থাকে আর আপনার ব্যক্তিগত ছবি আর কথোপকথন অনলাইনে ছেড়ে দেবে বলে যদি হুমকি প্রদান করে, পাশাপাশি তা ঠেকানোর জন্য তার বিনিময়ে যদি সে আপনার কাছে অর্থ দাবি করে সেক্ষেত্রে আপনি আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন।


৩. সেক্সুয়ালি এবিউজ-

কেউ যদি অনলাইনে আপনার ছবি দিয়ে কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আইডি খুলে, আপনার ছবি ব্যবহার করে কোনো পোস্ট প্রদান করে। আপনার ছবির সাথে অন্য ছবি জোড়া লাগিয়ে বিতর্কিত কিছু বানোয়াট খবর প্রকাশ করে, আপনার ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও অনলাইনে প্রকাশ করে, পাশাপাশি তা ঠেকানোর জন্য তার বিনিময়ে যদি সে আপনার কাছে অর্থ দাবি করে সেক্ষেত্রে আপনি আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন।


৪.হ্যাকিং-

অনলাইনে ডাটা বা তথ্য অনুমতিবিহীন চুরি, ধ্বংস বা ক্ষতিসাধন করার প্রক্রিয়াকেই বলা হয় হ্যাকিং। এতে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের তথ্য চুরি হয় এবং প্রাতিষ্ঠানিক সুনাম ক্ষুন্ন হয়।

এ রকম আরো অনেক কিছুই রয়েছে। তবে এখন নাগাদ এই সমস্যাগুলোই বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। এর মধ্যে ফেসবুকে সাইবার ক্রাইমের শিকার হওয়ার সংখ্যাই অনেক বেশি। এর বাইরেও অনেক রকমের সাইবার ক্রাইম রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে অনলাইন বা ইন্টারনেটে অনেক রকমের হয়রানি। নিচে অনলাইনের হয়রানির ধরনগুলো দেওয়া হলো:


• সামাজিক মাধ্যমে ফেক আইডি খুলে জ্বালাতন

• সামাজিক মাধ্যমের আইডি, ইমেইল অথবা ওয়েব সাইট হ্যাক

• সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন ট্রল গ্রুপ বা পেজে ব্যক্তিগত ছবি ছড়িয়ে দেওয়া

• বিভিন্ন পর্নো ওয়েবসাইটে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ধারণ করা ছবি বা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া

• সামাজিক মাধ্যমের আইডি হ্যাক করে অর্থ দাবি

• ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান ও হয়রানি

• কাউকে মারধর করে তার ভিডিও ধারণ করে তা অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া

• কোনো কিশোরী বা যুবতী বা নারীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে তার ভিডিও ধারণ করে তা অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া

• অনলাইনে ইকমার্সের নামে ভুয়া পেজ খুলে খারাপ পণ্য বিক্রির নামে হয়রানি

• অনলাইনে পরিচিত হয়ে অনলাইন কারেন্সি ট্রাঞ্জেকশন করতে গিয়ে ফ্রডের শিকার

• ভুয়া বিকাশ নম্বর থেকে ফোন করে লটারির কথা বলে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ

• ভুয়া বিকাশের এসএমএস দিয়ে গ্রাহককে দিয়েই অভিনব কায়দায় প্রতারণা

• অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট আর এটিএম কার্ডের ডিটেইলস চুরি করে অর্থ চুরি

• অনলাইনে স্প্যামিং এবং গণ রিপোর্ট

• অনলাইনে স্ক্যামিং

• অনলাইনে বিভিন্ন সেলেব্রেটি বা মানুষের নামে ভুয়া তথ্য ছড়ানো বা খবর প্রচার


কোনও ব্যক্তি সরকারের বিরুদ্ধে ফেইসবুকের একটি অশ্লীল বিবৃতি পোস্ট করলে সেটি কি একটি অপরাধ হতে পারে?

-হ্যাঁ, অবশ্যই হতে পারে যদি সরকারের বিরুদ্ধে বিশেষ বিবৃতি হতাশা সৃষ্টি করে, সম্মান হানি ঘটায় এবং বিবৃতিটি যদি।ব্যক্তির বা সরকারের ক্ষতির উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয় তবে এটি সাইবার মানহানির আওতায় পড়ে এবং এটি IPC ধারা 499 এব‌‌্ তথ্য প্রযুক্তি আইন, 2000 এর ধারা 4 এর অধীনে দন্ডযোগ্য অপরাধ।


যদি একজন ব্যক্তি ফেসবুক, ইমেল বা অন্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অন্য ব্যক্তির হয়রানির উদ্দেশ্যে অন্য ব্যক্তিকে অনুসরণ করে তবে তা কি অপরাধমূলক অপরাধ হতে পারে?

-হ্যাঁ, যদি ব্যক্তিটি হয়রানির উদ্দেশ্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অন্য ব্যক্তিকে অনুসরণকরে বা অপ্রত্যাশিত ফ্যাশনে অন্যের সাথে যোগাযোগ করতে থাকে তবে এটি সাইবার স্টকিংয়ের নামক একটি অপরাধ এবং সেকশন 503 আইপিসি অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

যদি কোন ব্যক্তিকে সোশ্যাল সাইট এর মাধ্যমে ধমকি, অশ্লীল কথাবার্তা, হ্যাকিং, এটিএম কার্ড জালিয়াতির শিকার হতে হয় তবে কোথায় অভিযোগ জানাতে হবে?

-যদি কোন ব্যক্তি কে সোশ্যাল সাইট এর প্রকোপে পড়ে তবে তিনি জেলার সাইবার ক্রাইম থানায় জানাতে পারেন অথবা তিনি স্থানীয় পুলিশ অফিসে গিয়ে পুলিশ কর্তা কে লিখিত অভিযোগ দিতে পারেন।


Some General Legal Information regarding Cyber crime or Computer Crime:---

New technologies create new criminal opportunities but few new types of crime. The information and Communication technologies revolutionized with the invention of the computer and computer has been a boon to the human community, but the same computer is an instrument to aid criminals. Therefore, certain well known crimes like unauthorized access to information, damage to property, distribution of obscene and indecent material etc. have assumed different dimensions with the emergence of Internet. Most cybercrime is an attack on information about individuals, corporations, or governments. Although the attacks do not take place on a physical body, they do take place on the personal or corporate virtual body, which is the set of informational attributes that define people and institutions on the Internet. In other words, in the digital age our virtual identities are essential elements of everyday life: we are a bundle of numbers and identifiers in multiple computer databases owned by governments and corporations. Cybercrime highlights the centrality of networked computers in our lives, as well as the fragility of such seemingly solid facts as individual identity.


What is Cyber Crime or Computer Crime?

Cyber crime is an act of creating, distributing, altering, stealing, misusing and destroying information through the computer manipulation of cyberspace without the use of physical force against the will or the interests of the victim. Cyber crime include variety of criminal offences and unlawful activities related to or having connection to computer or a traditional crime which has been transformed by the use of a computer related crimes such as criminal threats, internet auction, hacking of bank accounts, cloning of ATM card, cyber stalking, cyber defamation, email spoofing, morphing, phishing etc.

 Whether posting a statement in facebook against any person or against the government is a crminal offence?

If the particular statement against the government is causing defamation and the statement is made with the intention of causing harm to the reputation of such person or government then it amounts to cyber defamation and it's a punishable offence under Section 499 of the Indian Penal Code read with section 4 of the Information Technology Act,2000.


If a person is following another person through facebook, email, or other social media with the intention of harassing the other person in unsolicited fashion then is it a criminal offence?

Yes, if the person is following te other person via internet with the intention of harassment or to contact another in an unsolicited fashion then it's a crime called as Cyber Stalking and is punishable under section 503 IPC


সাইবার অপরাধ বা কম্পিউটার অপরাধ সংক্রান্ত কিছু সাধারণ আইনি তথ্য:

-Sabnam & Associates Law Firm


বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ কিন্তু কেড়ে নিয়েছে আবেগ। বিজ্ঞানের অবদানে এসেছে নানা নতুন প্রযুক্তি। আর এই প্রযুক্তিই নতুন অপরাধমূলক কার্যকলাপের ধারক ও বাহক। কম্পিউটার ও বিভিন্ন সোশ্যাল সাইট গুলো আবিষ্কারের সাথে তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপুল বিপ্লব ঘটিয়েছে। মানব সম্প্রদায়ের জন্য এটি যেমন আশীর্বাদ স্বরূপ ঠিক তেমন‌ই কিন্তু এই কম্পিউটার অপরাধীদের সহায়তা করার জন্য একটি যন্ত্র‌ও বটে। কম্পিউটার আবিষ্কারের সাথে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটেছে মানব সম্প্রদায়ের জন্য একটি আশীর্বাদ স্বরূপ, কিন্তু একই কম্পিউটার অপরাধীদের সহায়তা করার জন্য একটি যন্ত্র‌ও বটে। অতএব, নির্দিষ্ট তথ্যের জন্য অননুমোদিত অ্যাক্সেস, সম্পত্তি ক্ষতি, অশ্লীল মেসেজ, ছবি বিতরণ ইত্যাদি সুপরিচিত অপরাধ ইন্টারনেটের উত্থানের সাথে বিভিন্ন মাত্রা গ্রহণ করেছে। সর্বাধিক সাইবারক্রাইম ব্যক্তি, কর্পোরেশন, বা সরকার সম্পর্কে তথ্যর উপর একটি আক্রমণ যদিও কোনও শারীরিক শরীরের আক্রমণগুলি সংঘটিত হয় না, তবে এটি ব্যক্তিগত বা কর্পোরেট ভার্চুয়াল শরীরের উপর সঞ্চালিত হয়, যা তথ্যগত বৈশিষ্ট্যগুলির সেট যা ইন্টারনেটে মানুষ এবং প্রতিষ্ঠানগুলিকে সংজ্ঞায়িত করে। অন্য কথায়, ডিজিটাল যুগে আমাদের ভার্চুয়াল পরিচয় দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য উপাদান: আমরা সরকার এবং কর্পোরেশনের মালিকানাধীন একাধিক কম্পিউটার ডেটাবেসে সংখ্যা এবং সনাক্তকারীর একটি বান্ডিল। সাইবারক্রাইম আমাদের জীবনে নেটওয়ার্কে কম্পিউটারের কেন্দ্রিকতা তুলে ধরে, সেইসাথে স্বতন্ত্র পরিচয় হিসাবে যেমন আপাতদৃষ্টিতে কঠিন তথ্যগুলির তার বাস্তব রুপ।


সাইবার ক্রাইম বা কম্পিউটার অপরাধ কি?

সাইবার অপরাধটি মূলত শারীরিক শক্তির ব্যবহার না করে সাইবার স্পেসের সাহায্যে কম্পিউটার ম্যানিপুলেশন দ্বারা তথ্য তৈরি, বিতরণ, পরিবর্তন, চুরি, অপব্যবহার এবং ধ্বংসাত্মক মূলক কাজ। সাইবার অপরাধ বিভিন্ন ধরণের কম্পিউটারের সাথে সম্পর্কযুক্ত যেমন ইন্টারনেট নিলাম, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হ্যাকিং, এটিএম কার্ড ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে রূপান্তরিতকরণ, সাইবার স্টকিং, সাইবার ডিফাম্যামটেশন, ইমেইল স্পুফিং, মর্ফিং, ফাউজিং ইত্যাদি।


পণপ্রথা বিরোধী আইন নিয়ে কিছু আলোচনা।

পণ, যৌতুক অথবা দান যাই বলুন সবই এক। বিয়েতে পাত্রীর অভিভাবকের তরফে পাত্রকে যৌতুক দেওয়ার আচার বা রীতি বহুযুগ পুরোনো একটি প্রথা। আমার ওকালতির জীবনে বেশকয়েকটি বধূহত্যা এবং বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা চাক্ষুষ করেছি এবং আইনি লড়াইও লড়েছি যার প্রধান কারন, পাত্রপক্ষর দাবী বা ইচ্ছানুযায়ী পণ না দেওয়ার জন্যে পাত্রী বা বধূর ওপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। 

উইকিপিডিয়া জানাচ্ছে- "যৌতুক বা পণ হল কন্যার বিবাহে পিতামাতার সম্পত্তির হস্তান্তর প্রক্রিয়া। 'যু' ধাতু থেকে নিষ্পন্ন 'যুত' শব্দের অর্থ যুক্ত; বুৎপত্তিগত অর্থ হলো, পাত্র-পাত্রীর যুক্ত হওয়ার সময়ে অর্থাৎ বিয়ের সময় পাত্রীর জন্য যা কিছু মূল্যবান সামগ্রী দেয়া হয়, তা যৌতুক।" 

উইকিপিডিয়া আরো জানাচ্ছে- "পণ মৃত্যু বলতে বোঝায়, যৌতুক বা পণ নিয়ে বিবাদের ফলে বিবাহিত মহিলার, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির ক্রমাগত হয়রানি ও অত্যাচারের স্বীকার হয়ে অথবা আত্মহত্যায় প্ররোচিত হয়ে মৃত্যু। ২০১০ সালে ভারতে সর্বোচ্চ ৮,৩৯১ টি পণ মৃত্যু সংঘটিত হয়েছিল, অর্থাৎ প্রতি ১০০,০০০ মহিলার মধ্যে ১.৪ জনের মৃত্যু। ভারতে প্রতি বছর নারী হত্যার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশই পণ মৃত্যুর ঘটনা, যা ১৯৯৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একটি স্থিতিশীল প্রবণতা হিসেবে দৃশ্যমান।" 


'দ্য ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর' তথ্য অনুযায়ী, ভারতে পণ মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০১২ সালে সমগ্র ভারতে ১৮,২৩৩ টি পণ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। এর অর্থ প্রত্যেক ৯০ মিনিটে একজন বধূকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। 


ভারতীয় দণ্ডবিধির সেকশন ৩০৪বি এবং ৪৯৮এ ধারায় পণপ্রথাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রয়োজনে জেলও হতে পারে। তাই কোনও বিবাহিত মহিলা যদি মনে করেন তার শ্বশুরবাড়ি অকারণে পণ নিচ্ছেন বা পণের জন্য তাঁকে কোনওরকম শারীরিক কিংবা মানসিক অত্যাচার করছেন তাহলে তিনি নির্দ্বিধায় মামলা করতে পারেন। 


তবে জেনে রাখা ভালো, পণপ্রথা বিরোধী আইনের (The Dowry Prohibition Act, 1961) অপব্যবহার হচ্ছে। এমনও বেশকয়েকটি ঘটনা আমার জীবনে চাক্ষুষ হয়েছে যেখানে উচ্চবিত্ত পাত্রপক্ষ বধূহত্যা করেও শুধু টাকার জোরে আইনকে পকেটবন্দি করে বুকফুলিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে এবং প্রত্যন্ত গ্রামের কিংবা শহরের শিক্ষার সুযোগ লাভে বঞ্চিত অসংখ্য মহিলারা উক্ত আইনের বিষয়ে  অজ্ঞতার কারনে এবং আইনি পক্রিয়া চালানোর খরচের অভাবে নির্যাতন, লাঞ্ছনা, অপমান সহ্য করে বেঁচে থেকেছে। আবার এমনও অনেক পাত্র আছেন যারা বিয়েতে যৌতুক বা পণ নেওয়াকে তাচ্ছিল্যভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে নয়তো মাত্র এক টাকা কয়েন নিয়েছে দান হিসেবে। এটি কু নাকি সু-প্রথা সেই নিয়ে বিতর্ক আজও অব্যাহত। দুঃখ লাগে যখন দেখা যায় উচ্চবিত্ত পরিবারের কোনো উচ্চশিক্ষিত পুত্র সন্তান নিজের বিয়েতে নির্লজ্জভাবে হাত পেতে মোটা অঙ্কের অর্থ থেকে দানসামগ্রী, যৌতুক হিসেবে নেয়। 

পরিশেষে, এটাই বলতে চাই নারীদের উচিৎ নিজেকে অবলা, দুর্বল না ভেবে নিজেদের চেনা এবং জানা। তাদের উচিৎ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা বিদ্যাসাগর, রামমোহনদের। এই দুজন অসামান্য ব্যক্তিত্বরা বাল্যবিবাহ, সতীদাহপ্রথার বিরুদ্ধে কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। বিধবাবিবাহ প্রচলনের কারনে আজও বহু মহিলারা ডিভোর্সি তকমা ঘুচিয়ে ফের বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সম্মানের সাথে সংসার করছেন। 

জেনে রাখুন কিছু আইন-

১) ভারতীয় রেলওয়ে আইন ১৯৮৯ অনুযায়ী, ১৩৭ ধারা-  বৈধ নথিপত্র বা পাস ছাড়া রেলভ্রমণ, ১৪১ ধারা- বিনা কারণে চেন টানা, ১৪৪ ধারা- পণ্য ফেরি করা, ১৪৫ ধারা- অশালীন আচরণ করা, ১৪৭ ধারা- অনধিকার প্রবেশ এবং তা থেকে বিরত থাকতে ব্যর্থ হওয়া, ১৫৭ ধারা- টিকিট বা রেলের পাস বিকৃত বা অবৈধ সংশোধন করা, ১৫৯ ধারা- রেলের এলাকায় চালকদের নির্দেশ অমান্য করা, ১৬২ ধারা- মহিলা কামরায় অবৈধ ভ্রমণ, ১৬৬ ধারা- আবর্জনা সৃষ্টি করা এবং ১৬৭ ধারা- যাত্রী এলাকায় ধূমপান করা ইত্যাদি রেলওয়ে আইনের মোট ১৬টি ধারা সংশোধনের পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। এছাড়া, বিনাটিকিটে রেলভ্রমণে শাস্তির তালিকা থেকে হাজতবাস তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা এবং তার বদলে শুধুমাত্র আর্থিক জরিমানা ধার্য করার রীতি চালু করতে উদ্যোগ নিতে চলেছে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। 

সূত্র- ১৭ জুন ২০২০, হিন্দুস্থান টাইমস বাংলা অনলাইন।


২) বাংলাদেশের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ধারা ৪৪ নং অনুযায়ী, কোন ব্যক্তি কোন পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অসত্য বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করিলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদণ্ড, বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং ধারা ৪৫ অনুযায়ী, কোন ব্যক্তি প্রদত্ত মূল্যের বিনিময়ে প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদণ্ড, বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। উক্ত দুই ধারা অনুযায়ী বুজরুক জ্যোতিষী, তান্ত্রিক, গুণিন, ওঝা ইত্যাদিদের জেল অবধারিত। কারন, প্রথমত বিজ্ঞাপন দিয়ে তারা জনগণকে প্রলুব্ধ এবং বিভ্রান্ত করে প্রতারণা করেন এবং বিষাক্ত সাপের কামড়ের পরে নিজদের কেরামতি দেখানোর নামে অসংখ্য মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়।


৩) ২২ জুন ২০০৩ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে - রেইকি বা স্পর্শ চিকিৎসা যাঁরা করেন, তাঁরা নিজের নামের আগে 'ডাক্তার' শব্দটা কোনো ভাবেই ব্যবহার করতে পারবেন না। কারণ এই চিকিৎসা পদ্ধতির কোনো সরকারি স্বীকৃতি নেই। স্বাস্থ্যমন্ত্রক স্পষ্ট করে এটাও জানিয়েছে যে, রেইকি সহ জেম থেরাপি, কালার থেরাপি, ম্যাগনেটোথেরাপি,আরোমা থেরাপি, মিউজিক থেরাপি ইত্যাদি তথাকথিত প্রতিটি চিকিৎসা পদ্ধতিই বে-আইনি এবং এইসব পদ্ধতি শেখানো কিংবা প্রয়োগকারী ব্যাক্তি কোনো ভাবেই নিজের নামের আগে 'ডাক্তার' শব্দটাকে ব্যবহার করতে পারবেন না। ভারতে দুটো জোরালো আইন আছে বুজরুকি চিকিৎসার বিরুদ্ধে। আইন দুটি হল " (1) The Drugs & Magic Remedies (Objectionable Advertisement) Act 1954 

এবং (2) The Drugs And Cosmetics Act (Amendment) 1940।" The Drugs And Cosmetics Act 1940, Amendment GSR 884 (E) এই মর্মে ১৯ মার্চ ২০০৯ তারিখে ভারতের প্রতিটি দৈনিক পত্রিকায় নোটিশ জারি করেছে কেন্দ্রের 'স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর'।  এবার থেকে শাস্তির পরিমান আজীবন কারাদণ্ড এবং সাথে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা।


৪) সাপের কামড়ে কোনও রোগীর যদি মৃত্যু ঘটে –মৃত ব্যক্তির পরিবার এককালীন ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। কোন রোগী মারা গেলে সরকারী হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার “মৃত্যুর কারণ যে সাপের কামড়” এই মর্মে শংসাপত্র প্রদান করবেন কারণ সাপে কামড়ে মৃত ব্যক্তির পরিবারের প্রাপ্য ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ক্ষেত্রে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট নয় এই শংসাপত্রই চলবে।(সরকারী অর্ডার নং- ১৫৬১(১৯)F.R/৪P-৩/০৪ date ১৯.৮.২০০৮)।


৫) কোনো মহিলাকে যদি তার স্বামী অকারণে মারধর, গালিগালাজ করেন, শ্বশুরবাড়িতেও প্রতিনিয়ত অত্যাচারের সম্মুখীন হতে হয় তবে অবশ্যই হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্টের ১৩ নং ধারা অনুযায়ী মামলা করতে পারেন অত্যাচারিত মহিলা। সেই সঙ্গে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৫ নং ধারা অনুযায়ী মেয়েরা নিজের জন্য এবং সন্তানের জন্য খোরপোশ (financial maintenance) দাবি করতেই পারেন (স্বামীর রোজগার অনুযায়ী খোরপোশ নির্ধারণ করা হয়)। যদি একান্তই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে থাকে তাহলে হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের ১৪ নং ধারা এবং হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্টের ২৭ নং ধারা অনুযায়ী স্ত্রী, ডিভোর্সের পর নিজের যাবতীয় জিনিস ফেরত পাবেন তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে। গয়না, আসবাব, ফ্রিজ, টিভি-সহ যা কিছু তাঁর অভিভাবক যৌতুক হিসেব দিয়েছেন বিয়েতে সবেতেই অধিকার একমাত্র স্ত্রীর। এছাড়াও নিজের জিনিস ফেরত পেতে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট- এ মামলা করতে পারবেন।


৬) এই একুশ শতকে শুধু ভারতেই নয় পৃথিবীর বহু দেশে কন্যার জন্মকে অপরাধ হিসেবে দেখা হয়। তাই আজও ভারতে কন্যাভ্রুণ (Female feticide) হত্যার ঘটনা যথেষ্ট পরিমাণে শোনা যায়। জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল বা ইউএনএফপিএর জুন মাসে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ৫০ বছরে ভারতে প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ মেয়ে 'নিখোঁজ' হয়ে গেছে। প্রতি বছর দেশটিতে গর্ভপাত ঘটিয়ে ৪৬ লাখ কন্যা ভ্রূণ নষ্ট করে ফেলা হয় এবং জন্মের পর কন্যা শিশুদের ইচ্ছাকৃতভাবে অবহেলা করার কারণে জন্মের পর কন্যা শিশুমৃত্যুর হার খুবই বেশি।


১৯৭৪ সালে দিল্লিতে যন্ত্রের সাহায্যে গর্ভাবস্থায় মাতৃগর্ভে কন্যা না পুত্রভ্রুণ আছে তা জেনে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এবং ৮-এর দশকের প্রথম দিকে কিছু পরীক্ষাগারে ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ণয় করে কন্যাভ্রুণ হত্যা করা হতে থাকে। ২০০৩ সালে PCPNDT Act (The Preconception and Prenatal Diagnostic Techniques Act) চালু করা হয়। এতে বলা হল, বিশেষ কিছু ব্যাপারে ছাড়া কখনই গর্ভাবস্থায় USG করা ও শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করা যাবে না। এইভাবেই চেষ্টা চালানো হচ্ছে কন্যাভ্রুণ হত্যা বন্ধ করার। এই প্রসঙ্গে জেনে রাখা ভালো, যদি কোনও নারী গর্ভপাত করাতে চান সেক্ষেত্রে তার জীবনসঙ্গী এবং শ্বশুরবাড়ির অনুমতি নিষ্প্রয়োজন। The Medical Termination of Pregnancy Act, 1971 অনুযায়ী ২৪ সপ্তাহের মধ্যে যে কোনও নারী স্ব-ইচ্ছায় গর্ভপাত করাতেই পারেন। তবে বিশেষ কোনও কারণ থাকলে ভারতে ২৪ সপ্তাহের পরও গর্ভপাতের অধিকার দিয়েছে আদালত। একদিকে নারীকে দেবীশক্তিরুপে পুজো, অন্যদিকে ধর্ষণ কিংবা কন্যাভ্রুণ হত্য। এই নাটক কতদিন চলবে জানা নেই।

৭) লিঙ্গ বৈষম্য নিরোধক আইন- 

দেব-দেবীর মন্দিরে নারীদের প্রবেশাধিকার না থাকায়, তার বিরুদ্ধে নারীবাদী সংগঠনগুলি সোচ্চার সর্বদাই৷ কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষের মন এতে টলেনি৷ ধর্মগুরুদের মতে, প্রাচীনকাল থেকেই মাসিকের সময় মেয়েদের ‘অশুচি’ বলে গণ্য করা হয়৷ তাই তাদের ঢুকতে দেওয়া হয় না৷ এ নিয়ে আন্দোলনকারীরা আদালতের দ্বারস্থ হলে মুম্বই হাইকোর্ট মন্দির প্রবেশাধিকার আইন ১৯৪৭ অনুসারে রায় দেয় যে, মন্দিরে নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য করা যাবে না৷


৮) জাতিভেদ প্রথা অপরাধযোগ্য- 

জাতিভেদ বা অস্পৃশ্যতা দূরীকরণ আইনের ১৭নং ধারায় এই আইন লঙ্ঘনে ছ’মাসের জেল ও জরিমানার কথা বলা হয়েছে৷ কারণ মানুষের ব্যক্তি অধিকার মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে৷ সামাজিক মেলামেশা, খাওয়া-দাওয়া, ওঠা-বসা, ধর্মীয় স্থানে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে নীচু জাত আর উঁচু জাতের মধ্যে বিভেদ করা অবৈধ৷ ১৯৭১ সালে আইনটি সংশোধন করে তার নাম দেওয়া হয় নাগরিক অধিকার সুরক্ষা আইন৷


৯) লিঙ্গ বৈষম্য নিরোধক আইন- 

দেব-দেবীর মন্দিরে নারীদের প্রবেশাধিকার না থাকায়, তার বিরুদ্ধে নারীবাদী সংগঠনগুলি সোচ্চার সর্বদাই৷ কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষের মন এতে টলেনি৷ ধর্মগুরুদের মতে, প্রাচীনকাল থেকেই মাসিকের সময় মেয়েদের ‘অশুচি’ বলে গণ্য করা হয়৷ তাই তাদের ঢুকতে দেওয়া হয় না৷ এ নিয়ে আন্দোলনকারীরা আদালতের দ্বারস্থ হলে মুম্বই হাইকোর্ট মন্দির প্রবেশাধিকার আইন ১৯৪৭ অনুসারে রায় দেয় যে, মন্দিরে নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য করা যাবে না৷

১০) সম্পূর্ণ আইনটির নাম- Essential Services Maintenance Act 1968 সংক্ষেপ ESMA Act যা, ১৯৬৮ সালে তৈরী এবং ১৯৮১ সালে সংশোধন করা হয়। এই আইন লঙ্ঘন করলে ৬ মাসের জেল এবং কাজে বাঁধা সৃষ্টি করলে অথবা উৎসাহিত করলে শাস্তির পরিমাণ দ্বিগুণ হতে পারে। চিকিৎসা, পরিবহণ, বিদ্যুৎ সরবরাহের মতো জরুরি পরিষেবা ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে বা বিপর্যস্ত বলে সেই পরিস্থিতির মোকাবিলায় কর্মবিরতি, ধর্মঘট নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং প্রয়োজনে কর্মচারীদের ওভারটাইম করতে বাধ্য করতে পারে প্রশাসন। এমনই বলছে এসমা আইন। 

প্রসঙ্গত জানাই, Medical Council of India (Regulation 2002) এর 2 নং ধারা অনুযায়ী কোনো অবস্থাতেই কোনো মুমূর্ষু রোগীকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করতে পারেন না।

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86930